মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ লিগ্যালভয়েস : রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বিচক্ষণ লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের প্রত্যেকে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি আশা করব যে, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে তাদের গবেষণা চালিয়ে যাবেন। যা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানাতে সহায়ক হবে।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আজ বঙ্গভবনের দরবার হলে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন লিখিত ‘১৯৭১: প্রতিরোধ সংগ্রাম বিজয়’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন।
আব্দুল হামিদ সংশ্লিষ্ট সকলকে মুক্তিযুদ্ধের সকল তথ্য সম্ভার যত্নসহকারে সংরক্ষণের এবং নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম যাতে করে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে তা নিশ্চিত করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।’ বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী শক্তি সুযোগ পেলেই বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের শক্তিতে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারলে দেশও জাতি লাভবান হবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা অল্প সময়কাল সফল হয়, তবে শেষ পর্যন্ত তারা অবধারিতভাবে পরাজয়বরণ করেছে। কারণ, ইতিহাস তার আপনগতিতে চলে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের যে সিকিভাগ বিকৃত হয়েছে তা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি ‘১৯৭১: প্রতিরোধ সংগ্রাম বিজয়’ গ্রন্থটির অনুবাদ গ্রন্থটিকে অন্যতম গবেষণাকর্ম উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে অনেক বই আছে। তবে, খুব অল্পসংখ্যক বইই গবেষণামূলক।
অনেক বইই শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক অভিযানের ঘটনা নিয়ে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ দেশের বিভিন্ন অংশে সংগঠিত হয় এবং এর অনেক স্মৃতিময় ইতিহাস রয়েছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বহুসংখ্যক চাক্ষুস প্রামাণ্য ও মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুততার সঙ্গে কমে যাচ্ছে এমনও হতে পারে যে ১০ বা ২০ বছর পর কেউ আর জীবিত থাকবে না। কিন্তু মুক্তযুদ্ধে তাদের দান, তাদের বীরত্ব ও উজ্জ্বলতা চিরন্তণ এবং তা কখনোই অস্পষ্ট হবে না।
বইটি সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত হয়ে আব্দুল হামিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অনেক কিছুই এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে।
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্য ইমিরিটাস অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল ও আলোচ্য বইটির লেখক মো. সারোয়ার হোওেসন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *