সাংবাদিক গৌতম হত্যা মামলায় ৫ আসামির যাবজ্জীবন সাজা হাইকোর্টে বহাল

ফরিদপুরে সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যার ঘটনায় পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন সাজা বহাল রেখে বাকি চারজনকে খালাস দিয়ে আজ রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ রায় দেয়।
আসামি আসিফ ইমরান, সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, আসাদ বিন কাদির, আবু তাহের মতুর্জা ওরফে অ্যাপোলো ও তামজিদ হোসেন বাবুকে বিচারিক আদালতের দেয়া যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার সাজা বহাল রাখা হয়েছে। এ জারিমানা না দিলে আসামিদের আরও এক বছর কারাভোগ করতে হবে। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড পাওয়া আসিফ ইমতিয়াজ বুলু, কামরুল ইসলাম আপন, রাজিব হাসান মিয়া ও কাজী মুরাদ হাইকোর্টে আপিল করে রায়ে খালাস পেয়েছেন।
আজ রায়ের পর ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হারুন-অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট আপিলের রায়ে নয় আসামির মধ্যে পাঁচ আসামির সাজা বহাল রেখে বাকি চারজনকে খালাস দিয়ে আজ রায় দিয়েছে। খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতম দাসকে ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর হত্যা করা হয়। দীর্ঘ আট বছর বিচার শেষে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০১৩ সালে এ মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে নয় আসামির সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়।
ফরিদপুর শহরের মুজিব সড়কের সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি খবর প্রকাশের জের ধরে ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতম দাসকে তার কার্যালয়ে ঢুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি হাসানউজ্জামান ওইদিনই ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের দুইমাস পর ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ফরিদপুরের আদালতে ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) গোলাম নবী। দশ আসামির মধ্যে জাহিদ নামের একজন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে মামলা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়। অভিযোগপত্র দাখিলের পর স্পর্শকাতর বিবেচনায় সরকার ওই বছর এপ্রিল মামলাটি ফরিদপুর থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠায়।
বিচারিক আদালতের রায় বিষয়ে আনা আপিলের ওপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট এ মামলার রায়ের দিন আজ ধার্য করে দিয়েছিল।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হারুন-অর রশীদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাথী শাহজাহান, জাহাঙ্গীর আলম ও জহির আহমদ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *