প্রচন্ড চাপে ছিলেন মুসলিমলীগ সরকার

ঢাকা, লিগ্যাল ডেস্ক : সারা প্রদেশে এই সময় আরেকটি আন্দোলন চলছিল। মুসলিম লীগের অন্তর্কলহ ও ভগ্নদশা এবং প্রদেশব্যাপী অভাব ও আকালের পরিপ্রেক্ষিতে উত্সাহের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিবর্ধনের কাজ চলছিল। দলমত নির্বিশেষে সকলকেই আওয়ামী লীগে যোগদানের ডাক দেয়া হচ্ছিল। প্রধানত সভাপতি মওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক প্রদেশের সর্বত্র ঘুরে সভা করছিলেন, আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার জন্য। স্থানীয় কমিটিসমূহ গঠিত হচ্ছিল। মুসলিম লীগের নেতা ও কর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছিল। কারণ সামনে ছিল প্রদেশের সাধারণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি।

মুসলিম লীগ সরকারের এই সময়ে দেশের বিশেষ করে পূর্ব বাংলার অবস্থা কী ছিল তা অনুমান করা যায় ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মানুষের ক্রোধে ফেটে পড়া দেখেই। দেশের এই চিত্র ‘মোসাফির’ ছদ্মনামে তত্কালীন সাপ্তাহিক ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ‘একতার আহ্বান’ শিরোনামে এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে লিখেছিলেন এভাবে:

‘..একদিকে মাথাভারী শাসনব্যবস্থা, রাষ্ট্রের তহবিল হইতে মন্ত্রী ও বড়দের আরাম-আয়েশের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় এবং এই ব্যয়সঙ্কুলানের জন্য দিনদিন জনসাধারণের উপর নতুন নতুন কর চাপানো হইতেছে। ফলে আজ পাকিস্তানের সর্বত্র বেকারী ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়াছে। আর পাকিস্তানের সম্মানের খাতিরেই দুর্ভিক্ষের খবর চাপা দিবার প্রয়াস চলিয়াছে। এই দুর্নীতি ও ব্যর্থতার প্রতিবাদ করিতে গেলে নামিয়া আসে বর্বর আমলের অত্যাচার। …তথাকথিত মুসলিম লীগ সরকারের অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধকে ব্যাহত করিবার জন্য তারা শুধু কালা-কানুন প্রণয়ন করিয়াই ক্ষান্ত হইতেছে না, ৪।।০ (সাড়ে চার) কোটি পূর্ববঙ্গবাসীর মুখের ভাষা কাড়িয়া নিয়া আমাদিগকে শোষকের বলির ছাগল বানাইবার শেষ চেষ্টা চলিয়াছে

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *