উপজেলা নির্বাচনে ইসির বাজেট দিগুন

ঢাকা, লিগ্যাল ডেস্ক : ২০১৪ সালে ছয়ধাপে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বাজেট ছিল ৪’শ কোটি টাকা। এবার পাঁচধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ৯১০ কোটি টাকা বাজেট চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে একই নির্বাচন আয়োজনে দ্বিগুণ বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এবার বাজেট বৃদ্ধির মূল কারণ হিসাবে ইসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের কারণে বাজেট বেড়েছে। শুধু ইভিএম পরিচালনা ও এ-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হয়েছে ১৭০ কোটি টাকা। এছাড়া বাজেটে নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৪০ কোটি টাকা। যদিও এই টাকার অর্ধেকের বেশি টাকা ব্যয় হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে। বাকি টাকা ব্যয় হবে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে।

নির্বাচনী ব্যয় বাড়ার কারণ হিসাবে ইসি কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে যথাক্রমে ৩ হাজার, ২ হাজার ও ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। এবার দেওয়া হচ্ছে যথাক্রমে ৪ হাজার, ৩ হাজার ও ২ হাজার টাকা করে। এ ছাড়া নির্বাচনী মালামালের দাম বেড়ে গেছে। এই কারণে নির্বাচনী ব্যয় বেড়েছে।

ইসি ইতোমধ্যে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। দুইধাপের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৮৭টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে ১০ মার্চ। এ জন্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ১১ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১২ ফেব্রুয়ারি এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের ১২৯ উপজেলায় মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ ফেব্রুয়ারি; বাছাই করা হবে ২০ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ আগামী ১৮ মার্চ। এছাড়া তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ, চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ ও পঞ্চম ধাপে ১৮ জুন ভোট নেওয়া হবে। বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের প্রার্থী হতে বর্তমান পদ ছাড়তে হবে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অধিকাংশই এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ-মে মাসে ছয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আইনে মেয়াদ শেষের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে ছয় ধাপে ভোট হয়েছিল।

ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছেন, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। এদিকে, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হিসাবে এ পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়েছে ৭৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে ৪২৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। মোট ব্যয় আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *